ইফতার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) পবিত্র বাণী কি

প্রিয় পাঠক আজকে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলেছি ইফতার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) পবিত্র বাণী কি এই বিষয় নিয়ে। আপনারা ইতিমধ্যে অনেক ওয়েবসাইট খোঁজাখুঁজি করে দেখেছেন কিন্তু এ বিষয়ে সঠিক তথ্য কোন ওয়েবসাইটে পাননি। আমার আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়ুন, আশা করি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। এছাড়াও আরো জানতে পারবেন যে রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করানোর ফজিলত কি।
ইফতার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) পবিত্র বাণী কি
আমাদের সামনে চলে এসেছে রমজান মাস। এ মাস নিয়ে অনেকের মধ্যে অনেক স্বপ্ন থাকে। এই মাসের কারণে আল্লাহ তা'আলা মুসলিম জাতির উপর রহমত, নাজাত ও মাগফিরাত দিয়েছেন খুশি হয়।

ভূমিকা

ইফতার হলো একটি আরবি শব্দ। এর বাংলা অর্থ হলো খাবার খাওয়া উপবাসে থাকার পরে সেটা ভঙ্গ করে কিছু খাওয়া ইত্যাদি। ইফতারের আইটি আভিধানিক শব্দ অর্থ হলো নাশতা খাওয়া। ইসলামিক ভাষায় ইফতার হলো কোন রোজাদার ব্যক্তি সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হালকা কিছু খেয়ে রোজা ভঙ্গ করা। মহানবী (সা.) সুন্নত হলো হালকা কিছু খেয়ে রোজা ভঙ্গ করা বা ইফতার করা।

ইফতার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) পবিত্র বাণী কি

রোজা যেমন মুসলিম জাতির উপর ফরজ। তেমনি ইফতার হল মুসলিম জাতির উপর সুন্নত। আল্লাহর রাসূল বলেন কোন ব্যক্তি যদি একটা মুমিন ঈমানদার রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করায় তাহলে আল্লাহ তা'আলা তাঁর রোজার পরিমাণ সওয়াব যে ইফতার করায় তার আমলনামায় লিখে দেয়। শুধু যে ইফতার করলেই হবে না ইফতারের কিছু সুন্নত রয়েছে। আপনাদের অবশ্যই সে সুন্নত গুলো মেনে ইফতার করা প্রয়োজন।

ইফতারের রাসুলের সুন্নত কি কি

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেন তোমরা সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে তাড়াতাড়ি রোজা ভঙ্গ করবে অর্থাৎ তাড়াতাড়ি হালকা কিছু খেয়ে ইফতার করবে। ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালাম আরো বলেন মানুষ ততদিন কল্যাণের উপর থাকবে যতদিন সে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করবে (সহিহ আল- বোখারি ১৯৫৭)।

হযরত আবু আতিয়্যাহ (রা.) বলেন আমি একদিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা) কে জিজ্ঞেস করলাম, হে উম্মুল মুমিনিন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের ছাত্রীদের মধ্যে দুইজন আছে যাদের একজন তাড়াতাড়ি ইফতার করেন এবং তাড়াতাড়ি করে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। অপরজন একটু দেরিতে ইফতার করে এবং মাগরিবের নামাজ আদায় করতেও দেরি করে।

মা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন যে তাড়াতাড়ি ইফতার করে এবং তাড়াতাড়ি মাগরিবের নামাজ আদায় করেন তার ফজিলত অনেক বেশি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এইভাবে করতেন (সহিহ মুসলিম ১০৯৯)।

ইফতার করার সময় কি দিয়ে ইফতার করতে হয়

হযরত ইবনে আমের (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন সূর্যাস্তের সময় তোমরা রোজা ভঙ্গের জন্য সর্বপ্রথম খেজুর দিয়ে ইফতার করবে। কিন্তু তোমাদের কাছে যদি তখন খেজুর না থাকে তাহলে তোমরা পানি দিয়ে ইফতার করবে। তাই আপনারা অবশ্যই ইফতার করার সময় অবশ্যই প্রথমে খেজুর অথবা পানি দিয়ে ইফতার করবেন (সহিহ ইবনে খুজাইমা ২৭৮)।

রোজা থাকা অবস্থায় কোন সময় দোয়া কবুল হয়

ইফতারের জন্য খাবার সামনে নিয়ে যদি আপনি সূর্যাস্তের জন্য অপেক্ষা করেন অর্থাৎ সূর্যাস্তের একটু আগে ইফতার সামনে নিয়ে যদি আপনি আল্লাহর কাছে কিছু চান আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই তা দিয়ে থাকেন। আল্লাহ তাআলা এ সময় তার বান্দার উপর অনেক খুশি হয়ে থাকেন। কারণ সারাদিন আল্লাহর আনুগত্যের জন্য তার বান্দারা রোজা রেখে খাবার সামনে নিয়ে না খেয়ে তার হুকুমের জন্য অপেক্ষা করে।

অর্থাৎ আল্লাহ তারা এ সময় তার সকল রোজাদার বান্দার উপর এমনিতেই খুশি হয়ে থাকেন। তাই ইফতারের আগ মুহূর্ত দোয়া কবুলের সময়। এছাড়াও ওর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ইফতারের আগ মুহূর্তে ও তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ তা'আলা কবুল না করে ফিরিয়ে দেন না।সেই তিন ব্যক্তি হলো
  • ন্যায় বিচারক ও শাসনকর্তা
  • ইফতারের পূর্বের রোজাদার ব্যক্তির দোয়া
  • কোন নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া

রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করানোর ফজিলত কি

কোন রোজাদার ব্যক্তিকে যদি আপনি ইফতার করান আল্লাহ তাআলা সেই রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করানোর বিনিময়ে তার রোজার সমপরিমাণ সওয়াব আপনার আমলনামায় লেগে থাকেন। রাসূলুল্লাহ বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি এক মাস একটি রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করায় আল্লাহ তাআলা তার আমলনামার সম্পূর্ণ গুনাহ মাফ করে দেন এবং তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন।

আপনার যদি সামর্থ্য না থাকে তাহলে আপনি একটি রোজাদার ব্যক্তিকে খেজুর বা পানি দিয়েও যদি ইফতার করান তাহলেও এর সমাপনী মান সব আপনার আমলনামায় লেখা হবে (সহিহ ইবনে খুজাইমা ১৮৮৭)।

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক আপনার ইতিমধ্যেই পড়ে নিয়েছেন যে। আশা করি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। রোজায় ঈমানদার ব্যক্তিদের জন্য একটি সুখবর নিয়ে আসে। আল্লাহ তা'আলা এই মাসে শয়তানকে বন্দী করে রাখেন। এ সময় যারা আল্লাহ তাআলার আনুগত্য এবং তাকে রাজি খুশি করতে পারেন তারাই কামিয়াবী লাভ করে থাকেন।

রমজান মাসে আমরা বেশি বেশি করে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করব এবং তার আনুগত্য স্বীকার করব। প্রিয় পাঠক আমাদের এই ওয়েবসাইটে নতুন প্রতিদিন নতুন নতুন ইসলামিক তথ্যের আপডেট দেওয়া হয়ে থাকে। আপনাদের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন এবং তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url